শনিবার, ১ মার্চ, ২০১৪

মোবাইলে প্রেম, পরে প্রেমিক ও তার বন্ধুদের রাতভর গণধর্ষণ : গোপালগঞ্জে ধর্ষিত শিশু, পরিবারকে হত্যার হুমকি

ডেস্ক রিপোর্ট




মোবাইলে প্রেম হয় ঝালকাঠির তরুণীর সঙ্গে নারায়ণগঞ্জের এক বখাটের। একপর্যায়ে প্রেমের টানে ঘর ছেড়ে তরুণীটি নারায়ণগঞ্জ গেলে প্রেমিক ও তার বন্ধুদের হাতে রাতভর ধর্ষণের শিকার হয় সে। ঘটনা জানজানি হলে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয় শহর জুড়ে।
এ ঘটনার বাইরে গোপালগঞ্জে ধর্ষিত হয়েছে এক শিশু। ধর্ষণের পর ঘটনা মীমাংসার দাবিতে উল্টো ধর্ষিতার পরিবারকেই হত্যার হুমকি দিয়েছে ধর্ষকের পরিবার।
বিস্তারিত আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর :
গোপালগঞ্জ : গোপালগঞ্জে ধর্ষিত এক শিশুর পরিবারকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মীমাংসা করার নির্দেশ দিয়েছে ধর্ষকের এক স্বজন। গতকাল শুক্রবার বিকালে শিশুটির বাড়ি গিয়ে এ হুমকি দেয়া হয় বলে তার স্বজনরা জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে কোটালীপাড়া উপজেলার মান্দ্রা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণীর এক ছাত্রীকে ধর্ষণ করে একই গ্রামের সেকেন্দার শেখের ছেলে সোহাগ শেখ (২০)। মেয়েটি এখন গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে চিকিত্সাধীন আছে। মেয়েটির মায়ের অভিযোগ,
সেকেন্দার শেখের ছেলে সোহাগ শেখ নির্জন পুকুর পাড়ে নিয়ে তার মেয়েকে ধর্ষণ করে। ঘটনার পরই তাদের প্রতিবেশী ইসনাস মোল্লা ধর্ষক সোহাগ শেখকে আটক করে।

এ খবর জানতে পেরে সোহাগ শেখের বাড়ির লোকজন ইনসান মোল্লার বাড়িতে হামলা, ভাংচুর ও তাকে মারপিট করে সোহাগকে ছিনিয়ে নেয়।
স্কুলছাত্রীর মা আরও বলেন, শুক্রবার বিকালে ধর্ষক সোহাগের ভাই শাহিন শেখ তাদের বাড়ি এসে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিষয়টি মীমাংসা করার নির্দেশ দেয় তাদের। তা না হলে পরিবারের সদস্যদের হত্যার হুমকি দেয়।
ধর্ষকের পরিবার প্রভাবশালী হওয়ায় তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে মেয়েটির মা জানান।
কোটালীপাড়া থানার ওসি মো. আবদুল লতিফ ধর্ষণের ঘটনার কথা স্বীকার করে বলেন, ধর্ষককে গ্রেফতারে পুলিশ মাঠে নেমেছে। অভিযোগ পেলে মামলা দায়ের করা হবে।
ধর্ষকরা বাঁচার জন্য ছাত্রীর পরিবারকে হুমকি দিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে পার পাবে না। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কোটালীপাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান বিমল কৃষ্ণ বিশ্বাস বলেছেন, এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের বিচার করা হবে।
গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের গাইনি বিভাগের চিকিত্সক ফারিয়া জামান জানান, প্রথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় চিকিত্সা ও পরীক্ষা করানো হচ্ছে। রিপোর্ট পাওয়ার পর বিষয়টি আরো স্পষ্ট হবে।
নারায়ণগঞ্জ : নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লায় এক তরুণীকে তার প্রেমিক ও প্রেমিকের বন্ধুরা গণধর্ষণ করেছে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশ জামিল নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে। জামিল ফতুল্লার উত্তর ইসদাইর এলাকার বাদশা মিয়ার ছেলে।
গণধর্ষণের শিকার তরুণীর বরাত দিয়ে ফতুল্লা মডেল থানার ওসি (তদন্ত) সাইফুল ইসলাম জানান, ঝালকাঠি জেলার নেছারাবাদ দরবেশ আলী এলাকার ওই তরুণীর সঙ্গে মেঘা ওরফে শাওন নামের এক যুবকের ফোনে পরিচয় ও প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। মেঘা ওরফে শাওনের বাড়ি কুমিল্লা জেলায়। শাওনের আবদারে গত বুধবার ওই তরুণী নারায়ণগঞ্জে আসে।
নারায়ণগঞ্জের উত্তর ইসদাইর এলাকায় মেঘা ওরফে শাওনের বন্ধু জামিলসহ আরও কয়েকজনের সঙ্গে ওইদিন বিকাল পর্যন্ত একসঙ্গে সময় কাটায় ওই তরুণী। পরে জামিলসহ আরও ৫-৬ জন মিলে তরুণীকে রাতভর ধর্ষণ করে। বৃহস্পতিবার সকালে ধর্ষণকারীরা পালিয়ে যায়। বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে লোকজন জামিলকে আটকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতেই ওই তরুণী বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় মেঘা ওরফে শাওন ও জামিলের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত আরও ৫-৬ জনকে আসামি করে মামলা করেছে। ধর্ষিতার ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে বলে ওসি জানান।

কোন মন্তব্য নেই :

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন