বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

চুল পড়া রোধের সঠিক ও কার্যকরী পদ্ধতি

Beautiful_hairমানুষের সৌন্দর্যের অলংকার তার চুল। তাই চুল ঝরে পড়তে থাকলে যে কেউ দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। অতিরিক্ত চুল পড়তে থাকলে বা মাথা টাক হতে শুরু করলে আতংকিত হয়ে পড়াটাই স্বাভাবিক। টাক মাথা কেই বা পছন্দ করে? কিন্তু জানেন কি, প্রতিদিন নির্দিষ্ট পরিমাণে চুল পড়ে যাওয়াটা শরীরের স্বাভাবিক একটা প্রক্রিয়া? দেহের প্রতিটি কোষের মতো চুলেরও রয়েছে নির্দিষ্ট আয়ু। একটি চুলের আয়ু সাধারণত দুই থেকে ছয় বছর পর্যন্ত হয়। তারপর এটা নিজে থেকেই ঝরে যায়। তাই প্রতিদিন অন্তত ১০০টি চুল পড়ে যাওয়া স্বাভাবিক।


চিকিত্‍সা :

অতিরিক্ত চুল পড়লে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হোন। অতিরিক্ত চুল পড়ারও রয়েছে চিকিত্‍সা। তবে এসব চিকিত্‍সায় কিছুটা উন্নতি হলেও চুল একেবারে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয় না। নিয়মিত ওষুধ সেবন করে বা মিনস্কিডিল ব্যবহার করে উপকার পাওয়া যায়। আজকাল চুল প্রতিস্থাপন করা যায়, তবে তা বেশ ব্যয়বহুল।

চুল পড়া প্রতিরোধে :

প্রকৃতিগতভাবে চুল পড়াকে প্রতিরোধ করা সব সময় সম্ভব নয়। তবে চুলের নিয়মিত যত্ন নিলে চুল পড়ার হার অনেকাংশেই কমিয়ে আনা সম্ভব। করতে পারেন এই কাজগুলো -

খেতে হবে সঠিক খাবার :

চুল পড়া প্রতিরোধের প্রথম ধাপ হলো সঠিক খাবার গ্রহণ। আপনার শরীর যদি সঠিক পুষ্টি না পায় তাহলে চুলও হবে দুর্বল ও ভঙ্গুর, যার ফলে চুল যাবে ঝরে। খাদ্যতালিকায় রাখুন ভিটামিন ই ও আয়রন যুক্ত খাবার। আয়রন মাথার ত্বকে অক্সিজেন সরবরাহ করে এবং ভিটামিন ই রক্ত চলাচল স্বাভাবিক করে ও চুলের গোড়া মজবুত করে। ভেজিটেবল প্রোটিনও চুলের জন্য দরকারি, কারণ এতে আছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড যা চুল পড়া রোধে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। তাই নিয়মিত মাছ এবং প্রচুর পরিমাণে শাকসবজি খান। ভিটামিন সি একই ভাবে কাজ করে। এছাড়া খান ভিটামিন বি৬ ও জিংক সমৃদ্ধ খাবার। এ দুটোর অভাবে চুল সহজেই খুশকি দ্বারা আক্রান্ত হয়, যা চুল পড়ার অন্যতম কারণ।

পানিতেই চুলের যত্ন :

অস্বাস্থ্যকর খাবার ও দূষণ শরীরের ভেতর যে টক্সিন তৈরি করে তা চুল ও ত্বক উভয়েই জন্যেই ক্ষতি বয়ে আনে। পানি শরীরের ভেতরটা ধুয়ে-মুছে এসব ক্ষতিকর জিনিস শরীর থেকে বর্জ্য আকারে বের করে দেয়। যা চুলের জন্য খুবই উপকারী। প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করলে ত্বকের আর্দ্রতা বজায় থাকে, যা চুলকেও সতেজ ও মজবুত রাখে।

করুন চুলের মাসাজ :

প্রতিদিন কমপক্ষে ১০-১৫ মিনিট চুলের মাসাজ করলে মাথার ত্বকে রক্ত সরবরাহ বৃদ্ধি পায়। যার ফলে চুল পড়া রোধ এবং নতুন চুল গজানোর সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। অলিভ অয়েল অথবা এলমন্ড অয়েল দিয়ে চুলে মাসাজ করলে চুল পড়া রোধ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে খুশকি দূর হবে এবং চুল স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ও ঝলমলে হয়ে উঠবে।

চুলের যত্নে ভেষজ :

অ্যালোভেরার গুণের কথা কে না জানে! অ্যালোভেরার নির্যাস মাথার ত্বকে প্রয়োগ করুন। এটি চুলের গোড়া মজবুত করে চুল পড়া প্রতিরোধ করে। চুল পড়া রোধে মেহেদি সবচেয়ে বহুল ব্যবহৃত একটা ভেষজ। এটি চুলকে করে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ও মজবুত। মেথিও চুল পড়া রোধে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। এছাড়া মাঝে মাঝে চুলে ডিম, ভিটামিন ই ক্যাপসুল মাখলেও উপকার পাওয়া যায়।

নিয়মিত চুল পরিষ্কার :

চুল সুস্থ ও মজবুত রাখতে চাইলে নিয়মিত চুল পরিষ্কার খুবই জরুরি। তাই নিয়মিত চুল পরিষ্কার করুন। সপ্তাহে অন্তত ৩ দিন চুলে শ্যাম্পু করুন। তবে অবশ্যই চুলের ধরন বুঝে শ্যাম্পু করবেন। নতুবা এই ভুল শ্যাম্পুর ব্যবহারই আপনার চুল পড়ার কারণ হয়ে দাঁড়াবে।

চুল আঁচড়ান প্রতিদিন :

দিনে অন্তত ২-৩ বার চুল আঁচড়ান। বিশেষ করে রাতে ঘুমুতে যাবার আগে চুল আঁচড়ান। এতে মাথার ত্বকে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পেয়ে চুলের গোড়া মজবুত হয়। চুল জোরে না আঁচড়িয়ে বরং আস্তে আঁচড়ান। ভেজা চুল বেশি আঁচড়াবেন না। চুল নরম থাকতে ঠিক করে ফেলুন। চুল আঁচড়াতে ব্রাশের পরিবর্তে দাঁতওয়ালা চিরুনি ব্যবহার করা বেশি ভালো। চুল কখনোই টেনে, শক্ত করে বাঁধবেন না। এতে চুলের গোড়া দুর্বল হয়ে পড়ে।
বাংলা নিউজ 26.com /ঢাকা/রাহিম


কোন মন্তব্য নেই :

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন