বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

আনসারের জাতীয় সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী : বিএনপি-জামায়াত-শিবির আর যাতে দেশকে অস্থিতিশীল করতে না পারে সেজন্য সতর্ক থাকতে হবে



প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণতন্ত্র ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী সাম্প্রদায়িক শক্তি, বিএনপি-জামায়াত-শিবির ও তাদের দোসররা দেশকে আর যাতে অস্থিতিশীল করতে না পারে, সে লক্ষ্যে আনসার ও ভিডিপিসহ প্রতিটি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আরও সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে। তিনি বলেন, দেশের জনগণ সরকার পরিচালনার জন্য তৃতীয়বারের মতো আমাদের নির্বাচিত করেছে। আমরা দেশ ও জনগণের কল্যাণে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে অঙ্গীকারবদ্ধ। জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসকে আমরা কঠোর হস্তে দমন করেছি। বাংলাদেশের মাটিতে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসীদের অবস্থান করতে দেয়া হবে না ।

গতকাল সকালে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার সফিপুর আনসার-ভিডিপি একাডেমিতে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রামপ্রতিরক্ষা বাহিনীর ৩৪তম জাতীয় সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আনসারদের প্রশিক্ষণ ব্যবস্থাকে যুগোপযোগী করা হয়েছে। গ্রামভিত্তিক প্রশিক্ষণ এক সপ্তাহ থেকে বাড়িয়ে দুই সপ্তাহ করা হয়েছে। সাধারণ আনসারদের প্রশিক্ষণ ছয় সপ্তাহ থেকে আট সপ্তাহ করা হয়েছে। প্রশিক্ষণ কর্যক্রমে শারীরিক চর্চার অংশ হিসেবে মার্শাল আর্ট ব্যুথান এবং অগ্নিশাসনকে অন্তর্ভুক্ত করা
হয়েছে। অফিসারদের জন্য সিকিউরিটি সার্ভে কোর্স পরিচালিত হচ্ছে। বিশেষায়িত ব্যক্তিবর্গের নিরাপত্তার জন্য সিকিউরিটি ও প্রটেকশন কোর্স চালু করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বিএনপি-জামায়াত ও শিবিরের জঙ্গি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আন্দোলনের নামে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তি ও সম্পত্তির ওপর নজিরবিহীন ধ্বংসযজ্ঞ এবং নাশকতা চালিয়েছে। তাদের নির্মম লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছিল ট্রেন ও রেললাইন। আনসার ও গ্রামপ্রতিরক্ষা বাহিনী রেলের নাশকতা রোধে তাত্পর্যপূর্ণ অবদান রেখেছে। গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচনেও আনসার বাহিনী অত্যন্ত দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করেছে।
তিনি আরও বলেন, ক্রীড়াক্ষেত্রে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রামপ্রতিরক্ষা বাহিনী সর্বদাই সাফল্যের উজ্জ্বল স্বাক্ষর রেখে চলেছে। পরপর চারবার বাংলাদেশ গেমসে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জনের জন্য আমি আপনাদের আন্তরিক অভিনন্দন জানাই। ক্রীড়াক্ষেত্রে আপনাদের উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে সরকার সবর্দাই আপনাদের পাশে আছে।
প্রধানমন্ত্রী হেলিকপ্টারে করে সফিপুর আনসার একাডেমিতে আসেন। পরে সেখানে সকাল সাড়ে ১০টায় আনসার একাডেমির প্যারেড গ্রাউন্ডে পৌঁছান। প্যারেড গ্রাউন্ডে পৌঁছালে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও মহাপরিচালক নাজিম উদ্দিন তাকে স্বাগত জানান। পরে তিনি ইয়াদ আলী প্যারেড গ্রাউন্ড খোলা জিপে করে পরিদর্শন করেন এবং আনসার সদস্যদের কুচকাওয়াজ ও সালাম গ্রহণ করে প্রধানমন্ত্রী ভাষণ দেন।
তিনি আরও বলেন, একটি নতুন ব্যাটালিয়ন গঠনের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ব্যাটালিয়নের সব সদস্যকে ৭ দশমিক ৬২ সেন্টিমিটার অটোমেটিক রাইফেল প্রদান করা হয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, ব্যাটালিয়ন আনসার সদস্যরা এখন সব বাহিনীর সঙ্গে তাল মিলিয়ে কাঙ্ক্ষিত ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবেন। এ বাহিনীর কমান্ড কাঠামোকে আরও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এই বাহিনীকে পদোন্নতির পাশাপাশি পিসি, এপিসি সদস্যদের র্যাংক ও ব্যাজে সমতা এনেছি। গত বছর এই বাহিনীতে আরও ৬৭২ জন মহিলা আনসারের পদ সৃষ্টি করা হয়েছে।
সমাবেশে আনসার ও ভিডিপি বাহিনীতে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বীরত্বপূর্ণ এবং সেবামূলকসহ ৪ ক্যাটাগরিতে ৮০ জন আনসার ও ভিডিপি সদস্যকে পদক প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রী।
পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনসার একাডেমির লেকের পাশে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন।
 


 


 
 


 

কোন মন্তব্য নেই :

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন