অনেক চড়াই-উত্রাইয়ের পর গার্মেন্ট শিল্পে চীনের হারানো বাজার অনেকটাই
দখল করেছে বাংলাদেশ। এ শিল্পে বাংলাদেশের প্রতিযোগী দেশ ভিয়েতনাম, ভারত ও
পাকিস্তান। তবে সাম্প্রতিক সময়ে দেশের গার্মেন্ট খাতে চলমান নানা সমস্যার
কারণে বিদেশি ক্রেতারা বাংলাদেশের বিকল্প খুঁজতে শুরু করেছেন।
অপরদিকে, বাংলাদেশের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিবেশী দেশ ভারত এ সুযোগকে কাজে
লাগাতে ব্যাপক তত্পরতা শুরু করেছে। ভারতের পরিকল্পনাবিদরা ৫০টি সমন্বিত
টেক্সটাইল পার্ক তৈরির দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়েছে। ইতোমধ্যে ভারতের ৯টি
রাজ্যের ২৬টি পার্কে স্থাপিত হয়েছে ৫৯২টি ইউনিট। পাকিস্তানের দৈনিক পত্রিকা
দ্য নিউজের অনলাইনে গতকাল (বৃহস্পতিবার) এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
‘চীনের শূন্যস্থান পূরণ করছে ভারত, পিছিয়ে পড়ছে বাংলাদেশ’ শিরোনামে
প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পোশাক খাতের আন্তর্জাতিক বাজার ধরতে ভারত
সরকার ২০০৯-১০ সাল থেকে এসব প্রকল্পে অর্থ সরবরাহ শুরু করছে। এখন পর্যন্ত
তারা মঞ্জুরিকৃত অর্থের ৪০ শতাংশ বা ১২.৭৬ বিলিয়ন রুপি ব্যয় করেছে।
পাকিস্তান হোসিয়ারি ম্যানুফ্যাকচারিং এসোসিয়েশনের (পিএইচএমএ) সাবেক
চেয়ারম্যান আদিল ভাট বলেন, ভারতের এই প্রকল্প ছোট ও বড় উদ্যোক্তাদের বাড়তি
সুবিধা দিতে সক্ষম। তিনি জানান, ভারত একশ’ একর জায়গাজুড়ে বিদ্যুত্চালিত
তাঁত ক্লাস্টার ও ২০ একরে হস্তচালিত তাঁত ক্লাস্টার স্থাপন করেছে। ব্যাংক
ঋণের অপেক্ষা ছাড়াই ভারত সরকার এসব উন্নয়ন কার্যক্রমের জন্য প্রতিশ্রুত
মঞ্জুরি দিয়েছে। এটা এসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ার কিনতে স্টকহোল্ডারদের উত্সাহিত
করেছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যাংক ঋণ পাবার ক্ষেত্রেও সরকার সহায়তা
করেছে।
পাকিস্তানে মোশাররফ সরকারের সময় করাচি ও লাহোরে গার্মেন্ট সিটি ঘোষণার পর
আর নতুন করে কোনো ঘোষণা আসেনি বলেও উল্লেখ করেন পিএইচএমএ-এর সাবেক
চেয়ারম্যান।
অল পাকিস্তান টেক্সটাইল মিলস এসোসিয়েশনের (পাঞ্জাব) চেয়ারম্যান এসএম তানভীর
বলেন, ভারত ইতোমধ্যে তামিলনাড়ুতে উচ্চ প্রযুক্তি সম্পন্ন কারখানা স্থাপন
করেছে। প্রতিযোগিতার জন্য বিভিন্ন স্তরে আরো আটটি তাঁত পার্ক প্রতিষ্ঠা
করেছে। বস্ত্রখাতে চীনের দখলদারিত্বের পর সেই সুযোগ নিতে ভারত তার সক্ষমতা
বাড়াচ্ছে। কিন্তু এক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অভাবে বাংলাদেশ আগামীতে
পোশাক খাতে আরও পিছিয়ে পড়তে পারে।
কোন মন্তব্য নেই :
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন