শুক্রবার, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

কি ছিল ভোটারদের বিবেচনায়?

কি ছিল ভোটারদের বিবেচনায়?

vote bdনিউজ ডেস্ক : আওয়ামীলীগের নেতৃত্বাধীন সরকার উপজেলা নির্বাচনে কারচুপি করেও ভরাডুবি ঠেকাতে পারেনি বলে জানিয়েছে বাংলাদেশে অন্যতম একটি প্রধানদল বিএনপি।
প্রথম দফায় ৯৭টি উপজেলার নির্বাচনে ৫৬টির বেশি উপজেলায় বিএনপি এবং জামায়াত সমর্থিত প্রার্থীরা জয়ী হয়েছে ।
স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার এই নির্বাচনে এবার জাতীয় রাজনীতি অগ্রাধিকার পেয়েছে বলে বিশ্লেষকদের অনেকে বলেছেন।
তাঁরা মনে করেন, গত পাঁচ জানুয়ারির জাতীয় সংসদ নির্বাচন একতরফাভাবে হওয়ায় ভিন্ন প্রেক্ষাপটে এই উপজেলা নির্বাচনে জাতীয় রাজনীতির প্রভাব এবার বেশি পড়েছে।
প্রথম পর্যায়ে ৯৭টি উপজেলায় ভোটগ্রহণের দিনে বুধবার বিএনপি ঢাকায় দু’দফায় সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচনে কারচুপির নানান অভিযোগ তুলেছিল।
৬/৭টি উপজেলায় বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীরা নির্বাচন বর্জনও করেছিলেন ভোটগ্রহণের মাঝপথে।
তবে গণমাধ্যমে বেসরকারি যে ফলাফল প্রকাশ হয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে, বিএনপি এবং জামায়াত সমর্থিত প্রার্থীরা ৫০টির বেশি উপজেলায় জয়ী হয়েছেন।
আর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীরা এসেছেন ৩০ টির মতো উপজেলায়।
সংবাদ মাধ্যমে এমন ফলাফল প্রকাশের পর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক বিবৃতিতে বলেছেন, সুষ্ঠু নির্বাচন হলে ৯৫ শতাংশ উপজেলাতেই বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীরা জয়ী হতেন।
স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা নিয়ে কাজ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সালাহউদ্দিন এম আমিনুজ্জামান। তাঁর মতে, ৫ই জানুয়ারির একতরফা নির্বাচনের কারণে এই উপজেলা নির্বাচনে জাতীয় নির্বাচনের প্রভাব বেশি পড়েছে।
তিনি বলছিলেন, সাধারণত স্থানীয় ইস্যূ এবং প্রার্থীর ব্যক্তিত্ব ভূমিকা বেশি থাকে। এবার নির্বাচনটা যেহেতু একটা ভিন্ন প্রেক্ষাপটে হয়েছে এবং ৫ই জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে মানুষ অংশ নিতে পারেনি। তার একটা রাজনৈতিক মাত্রা যোগ করেছে এই নির্বাচনে। আর সেকারণে অন্যান্য যে কোন সময়ের তুলনায় এই নির্বাচনে জাতীয় রাজনীতির প্রভাব অনেক বেশি পড়েছে বলে আমার ধারণা।
প্রথম ধাপে যে ৯৭টি উপজেলায় নির্বাচন হলো, তার বেশিরভাগ উপজেলা পড়েছে উত্তরাঞ্চলে।
উত্তরের দিনাজপুর জেলা থেকে স্থানীয় সাংবাদিক আসাদুল্লাহ সরকার বলেছেন, তাদের অঞ্চলে উপজেলা নির্বাচন পুরোপুরি রাজনৈতিক চেহারা পেয়েছিল।
তিনি বলছিলেন, মানুষ আসলে ব্যক্তি বা যোগ্যতাকে যত না গুরুত্ব দিয়েছে, তার চেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে দলীয় পরিচয়কে। প্রার্থী আওয়ামী লীগ করে কিনা, বা বিএনপির সাথে জড়িত কিনা অথবা জামায়াতের কিনা সেটিই ভোটাররা বেশি বিবেচনা করেছেন।
তিনি মনে করেন, দিনাজপুর অঞ্চলে ভোটাররা যখন রাজনৈতিক বিবেচনায় এগিয়েছেন। সেখানে বিএনপি এবং জামায়াত ছিল ঐক্যবদ্ধ। কিন্তু আওয়ামী লীগের কয়েকজন করে প্রার্থী ছিল।
ফলে আওয়ামী লীগ সমর্থকদের ভোট অনেক ভাগে ভাগ হয়েছে। অন্যদিকে বিএনপি, জামায়াত তাদের ভোট ঠিক মত তারা আদায় করতে পেরেছে বলে তাঁর ধারণা।
এই একইচিত্র পাওয়া যাচ্ছে অন্যান্য অনেক জায়গা থেকে। দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পশ্চিমে যশোর, ঝিনাইদহ, খুলনা, মাগুরা এবং বরিশাল অঞ্চলেও ভোটারদের মধ্যে স্থানীয় ইস্যুর চেয়ে রাজনৈতিক বিষয় অগ্রাধিকার পেয়েছে। এমন ধারণাই পাওয়া যাচ্ছে।
কুষ্টিয়া থেকে স্থানীয় সাংবাদিক তারিক উল ইসলাম বলছিলেন, ভোটারদের সাথে কথা বলে আমার মনে হয়েছে, তারা দল দেখে ভোট দিয়েছে এবং জাতীয় রাজনীতির অনেক বিষয় তারা বিবেচনায় নিয়েছে।
তিনি আরও বলেছেন, দলগুলোর অবস্থান নিয়ে কুচ্ছিা সদর উপজেলার দিকে যদি তাকাই, এখানে জামায়াতের থেকে উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনিও প্রার্থী হয়েছিলেন। বিএনপির একক প্রার্থী ছিল। কিন্তু জামায়াত প্রার্থী এবার ভোট বেশি না পাওয়ায় স্থানীয়ভাবে ধারণা করা হচ্ছে, জামায়াত বিএনপিকে সমর্থন দিয়েছিল।
আর আওয়ামীলীগ ঐক্যবদ্ধ ছিল না এবং তাদের কয়েকজন প্রার্থী ছিল। ফলে বিএনপি জয়ী হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
এই উপজেলা নির্বাচন যখন রাজনৈতিক চেহারা পেয়েছে। তখন সেটাকে কাজে লাগাতে বিএনপি মাঠপর্যায়ে বেশ ঐক্যবদ্ধ ছিল।
কিন্তু আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল দলটিকে অনেক জায়গায় সমস্যায় ফেলেছে বলে বিশ্লেষকদের অনেকেই মনে করেন।
০৩.০৭/http://banglanews26.com/রাহিম



কোন মন্তব্য নেই :

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন