বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

বাগেরহাটে ছাত্রীকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদে পিটুনি, গৌরনদীতে প্রতিবন্ধীকে ধর্ষণ : কুবিতে ছাত্রীর সঙ্গে অশোভন আচরণ, শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

ডেস্ক রিপোর্ট
বাগেরহাটের চিতলমারীতে স্কুলছাত্রীকে উত্ত্যক্ত ও মোবাইলে ছবি তোলার প্রতিবাদ করায় ছাত্রী ও তার ভাইকে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করা হয়েছে। আহত ওই স্কুলছাত্রী ও তার ভাইকে চিতলমারী উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে।
বরিশালের গৌরনদীতে এক মানসিক প্রতিবন্ধীকে বখাটেদের ধর্ষণের ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। অন্যদিকে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) এক ছাত্রীর সঙ্গে অশোভন আচরণের জের ধরে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে শিক্ষার্থীরা। সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেছেন তারা। আমার দেশ-এর প্রতিনিধিদের পাঠানো বিস্তারিত খবর :
কুমিল্লা (উত্তর) : কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ছাত্রীর সঙ্গে অশোভন আচরণের জের ধরে অবস্থান ধর্মঘট করে কুবির শিক্ষার্থীরা। গতকাল বুধবার সকাল ৯টায় শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশপথ কোটবাড়ীতে অবস্থান ধর্মঘট শুরু করে। এ সময় তারা কোটবাড়ী সড়কে যান চলাচল বন্ধ রাখে এবং কোটবাড়ী জাদুঘর মোড়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সিএনজি চালকের বিচার ও ভাড়া কমানোর দাবিতে তাদের এই আন্দোলন। শিক্ষার্থীদের অবস্থান ধর্মঘটের প্রতিবাদে চাঙ্গিনী মোড়ে অবস্থান করে পাল্টা কর্মসূচি পালন করে সিএনজি চালিত অটোরিকশার চালকরা। দু’পক্ষের অবস্থান কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আইনুল হকের নেতৃত্বে প্রক্টোরিয়াল বডির সব সদস্য, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার, ছাত্র উপদেষ্টা, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান, সদর দক্ষিণ থানার ওসি, ছাত্রনেতা মাহমুদুর রহমান মাসুমসহ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও ছাত্র নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
অপরদিকে সিএনজি মালিক সমিতির সভাপতি, স্থানীয় কাউন্সিলর ও ড্রাইভারদের উপস্থিতিতে ছাত্রদের দাবির প্রেক্ষিতে টমছম ব্রিজ-কোটবাড়ী রাস্তার ভাড়া ১৫ থেকে কমিয়ে ১২ টাকা, কোটবাড়ী থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাড়া ১০ থেকে কমিয়ে ৫ টাকা করা হয়।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার রাতে কুবির এক ছাত্রীর সঙ্গে সিএনজি চালিত অটোরিকশার ড্রাইভার অশোভন আচরণ করাকে কেন্দ্র করে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা কয়েকটি সিএনজি ভাংচুর করে।
বাগেরহাট
বাগেরহাটের চিতলমারীতে স্কুলছাত্রীকে উত্ত্যক্ত ও মোবাইলে ছবি তোলার প্রতিবাদ করায় ছাত্রী ও তার ভাইকে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করা হয়েছে। আহত ওই স্কুলছাত্রী ও তার ভাইকে চিতলমারী উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় ছাত্রীর খালা রাহিলা বেগম বাদী হয়ে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার কাঠিপাড়া গ্রামের মানসিক প্রতিবন্ধী হাসিনা বেগমের মেয়ে মিনারা (১৪) ও ছেলে রাসেল (১৮) দরিদ্রতার কারণে খালার বাড়িতে থেকে লেখাপড়া করে আসছে। মিনারা স্থানীয় নবপল্লী জুনিয়র বালিকা বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর মেধাবী ছাত্রী (রোল নং-১)। একই গ্রামের এলেম উদ্দিন শেখের ছেলে হারেজ শেখ তাকে স্কুলে যাওয়া-আসার পথে প্রায়ই উত্ত্যক্ত করত। এ ঘটনায় স্থানীয়ভাবে কয়েকবার সালিশি বৈঠকও হয়। এর জের ধরে বুধবার সকাল সাড়ে ৭টায় মিনারা স্কুলে যাওয়ার পথে কাঠিপাড়া ব্রিজের ওপর জোরপূর্বক হারেজ মোবাইলে তার ছবি তুলতে যায়। এতে মিনারা বাধা দিলে তাকে বেধড়ক মারপিট করে মাটিতে ফেলে দেয়া হয়। মিনারার চিত্কারে তার ভাই রাসেল ছুটে এলে তাকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করা হয়। এ ঘটনায় ভাই-বোন গুরুতর আহত হয়। আহত দুজনকে চিতলমারী উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে।
স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল ন্যক্কারজনক এ ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে উঠেপড়ে লেগেছে এবং অভিযোগ না করতে নানা হুমকি দিচ্ছে বলে মিনারার পরিবার জানিয়েছে।
নবপল্লী নিম্ন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা শিখা রাণী হাজরা জানান, ঘটনার খবর শুনে তাত্ক্ষণিক তিনি আহত ছাত্রীকে দেখতে হাসপাতালে ছুটে যান। নিন্দনীয় এ ঘটনার প্রতিবাদে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় স্কুল পরিচালনা পর্ষদ জরুরি সভা আহবান করেছে। এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি সদস্য কাজী মাহাতাব হোসেন চান্নু জানান, বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মীমাংসার চেষ্টা করা হচ্ছে।
তবে চিতলমারী থানার ওসি দিলীপ কুমার সরকার জানান, তিনি লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
গৌরনদী (বরিশাল)
বরিশালের গৌরনদী উপজেলার শাহাজিরা গ্রামে মঙ্গলবার রাতের আঁধারে অজ্ঞাত এক পাগলী (২৫)-কে ধর্ষণকালে হাতেনাতে ধরে ইউনুস হাওলাদার (৫৫) নামের এক বৃদ্ধকে গণধোলাই দিয়েছে জনতা। ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহের জন্য গ্রামের একাধিক যুবকের নামে থানায় মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
স্থানীয় গ্রামপুলিশ সরোয়ার হাওলাদার, মোকসেদ মীর, আবুল হাসানাতসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, ওইদিন মধ্যরাতে স্থানীয় একটি কলই ক্ষেতে (খেসারির ক্ষেত) নিয়ে শাহজিরা গ্রামের বখাটে ইউনুস হাওলাদার অজ্ঞাত এক পাগলীকে ধর্ষণ করে। এ সময় গ্রামবাসী তাকে হাতেনাতে ধরে গণধোলাই দেয়। পরে স্থানীয়দের অনুরোধে ২০ বার কানধরে ওঠবস করিয়ে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য ওই এলাকার একটি কুচক্রী মহল ইউনুস হাওলদারকে হাসপাতালে ভর্তি করে এলাকার একাধিক যুবকের নামে থানায় মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেছে। মিথ্যা অভিযোগ থেকে মুক্তি পেতে গ্রামবাসী পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

কোন মন্তব্য নেই :

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন